II পার্থ মুখার্জী II
পড়ছে মনে,
সেই দিনটা
কলেজের শুরু,
মনটা উথাল
মেঘলা আকাশ
ডাকছে গুরু গুরু।
দিনটা প্রথম,
বুক গুরগুর
ধীরে ধীরে চলা,
ক্লাসের সবাই
বেঞ্চে বসা
আমিও বসি সেথা।
চোখে পড়ল
এক কোণেতে
তার বসে থাকা,
কালো বোরখায়
মুখটা ঢাকা
পাশের আসন ফাকা।
অবাক হলাম
কান্ড দেখে,
এই যুগেতেও চলে !
আলোচ্চ্য হলো
বোরখা নারী,
সবার মুখে মুখে।
দিন গড়ায়
পড়ার ফাঁকে,
আলাপ বাড়ে
সবার সাথে,
জানতে পেলাম
রাজিয়া খাতুন
নাম সে মেয়েটার,
স্বল্প ভাসি,
স্মিত হাসি,
নেইকো অহংকার।
স্কলারশিপ টা
পায় তো ভালই
অধীতি টা তুখোর।
ক্লাসের সবাই
ভালোই বসে,
তারিফে সব মুখর।
সেদিন কেন যে
পাশে এসে বসে!
কথায় কথা গড়ায়,
জানতে পেলুম
গরিব ভারী,
নুন আনতে পান্তা ফুরায়।
সুধাই তারে,
বোরখা কেন
নিত্য আবরনে?
মুখটা নিচু
বাক সরে না
দু চোখ ছলছল,
বিব্রত হই,
বাক্য হারাই,
মন যে টলোমল।
সময় বহে
আপন মনে,
দুইটি প্রাণী চুপ,
মুখটা তোলে,
চাউনি গভীর
বুক করে ধুপ ধুপ I
বললে হেসে
রাজিয়া খাতুন,
'কি আর বলি আমি
তোমরা সবাই
সাত দিনেতেই
পরছ পোশাক দামী,
বাবা আমার
রাজ মিস্ত্রী
সীমিত রোজগার,
পয়সা কোথায়?
পোশাক কিনব
পরিধেয় রোজকার!
ছিন্ন পোশাক,
বাধ মানে না
ভরপুর যৌবন ,
ঢাকব কিসে?
এই দীনতা !
বোরখা আপন জন।
মৌলবী দা
দান দিয়ে যান
বোরখা গোটা দুই,
সারটা দিন
গতর ঢাকি,
রাতে খুলে শুই।
উল্টা পুরান,
আমার পালা,
হলেম অধোবদন,
বললে সে যে,
গভীর স্বরে,
কিসের জন্যে রোদন?
পড়ছি আমি,
শক্ত হাতে
ধরব বাবার হাত,
সকাল বেলায়
মায়ের সেবা,
পড়ি সারা রাত।
মিষ্টি করে
থুতনি ধরে
মুখটি আমার তোলে,
সুয্যি মামার
রঙিন আলো
রাজির মুখে খোলে।
পরীর দেশের
গল্প কথা
ঠামির মুখে শোনা,
জ্যান্ত পরি
পাশেই বসে
সুরের আনাগোনা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন